Sunday 15 January 2017

ঘুটিয়ারি শরিফঃ (গাজী বাবার কাহিনী)

  আষাঢ় থেকে সপ্তাহ  ব্যাপীঅম্বুবাচীমেলাতেও
ভক্তদের ভিড় উপছে পড়েউৎসবের আয়োজন করে সরকার অনুমোদিত ট্রাস্টি বোর্ড

গাজিবাবা

মধ্যযুগে পীর হজরত গাজি সৈয়দ মুবারক আলি শাহ’র (গাজীবাবা) আবির্ভাব ঘটেছিল
তিনি ছিলেন দিল্লিবাসীবাদশা চন্দন সাহা’র ছেলেবেলে গ্রামের আদমপুরের জঙ্গলে তাঁর জন্ম হয়ছোটবেলা থেকে তিনি ছিলেন সংসার বিমুখ। 

গাজিবাবার দরগাহ।

তাঁর দুই পুত্র জন্মে ছিলদুঃখী গাজী এবং মেহের গাজীআল্লাহর সান্নিধ্য পাওয়ায় আশায় মুবারক সংসার ত্যাগ করে ঘুরতে ঘুরতে ঘুটিয়ারি শরিফের কাছে বিদ্যাধরী নদীর তীরে নারায়ণপুরে এসে আশ্রয় নেন


গাজিবাবার মাজারের ভিতরের অংশ। 

তারাহেদে’
নামে একটি দিঘির পাড়ে আস্তানা গেড়ে ছিলেনজানতে পেরে তৎকালীন জমিদার রামচন্দ্র চাটুজ্যে তাঁকে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দিয়েছিলেনপরে তিনি ধোয়াঘাটায় পৌঁছে হেলা খাঁ নামে এক জমিদারের বাড়িতে আশ্রয় নেন। 


গাজিবাবার মক্কা পুকুর

অদূরে কুড়ালির কাছে সাপুর গ্রামে একটি মরা শেওড়া গাছেরতলায় নিয়মিত বসতেনবিশ্রাম নিতেনকয়েকদিনের মধ্যে গাছটিতে আশ্চর্যজনক ভাবে নতুন পাতা, ফুল ফোটায়তাঁর এই আশ্বার্য কেরামতির জন্য স্থানীয় মানুষ তাঁকে শ্রদ্ধা করতে লাগলেন  
তৎকালীন সময় রাজা মদন রায় এক সময় সমস্যায় পড়ে জেল খাটার উপক্রম হয়েছিলমুবারক তাঁকে বাঁচিয়ে ছিলেনখুশি হয়ে রাজা তাঁকে ঘুটিয়ারি শরিফে ১,৩৫৬ বিঘা জমি পাট্টা দিয়েছিলেনইতিমধ্যে মুবারকের বড় ছেলে দুঃখী তাঁর সন্ধান করতে করতে ধোয়াঘাটায় তাঁর (বাবা গাজীর) খোঁজ পায়বাবাকে কাছে পেয়ে ছেলে আপ্লুত হয়ে বাবার সঙ্গে থাকতে শুরু করেপরবর্তী সময় ভক্তদের মুখে মুখে পীরের মাহাত্ম চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে

মানিকপীর।
কথিত আছে, ১৭০৭ সালে মন্বন্তর হয়অনাবৃষ্টির কারণে চাষাবাদ বন্ধ হয়ে গিয়েছিলছেলে দুঃখী এবং গ্রামবাসী, চাষিরা মুবারককে বলে, ‘বাবাজী! ‘এখনও বৃষ্টি হল নাআমাদের ছাওয়ালগণ কি খাবে?’ তিনি ব্যথিত হয়ে মক্কা শরিফে আল্লার কাছে বৃষ্টির জন্য প্রার্থনা করতে ধ্যানমগ্ন হনতিনি ভক্তদের বলেছিলেন, যতদিন পর্যন্ত না বৃষ্টি হয় ততদিন যেন তাঁর বন্ধ ঘরের দরজা কেউ না খোলেনএক সময় একদল পাঠান পীর সাহেবের হাজোত (পুজার্ঘ‍্য) নিয়ে উপস্থিত হয়েছিলদীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর মুবারকের কোনও সাড়া না-মেলায় অধৈর্য হয়ে তারা (পাঠান) দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দেখেন ধ্যানমগ্ন অবস্থায় বাবা মারা  গিয়েছেনসেই দিনটি ছিল ১৭ শ্রাবণতারপরই আকাশ ভেঙে ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নেমেছিলএই দিনটি গাজি বাবার মৃত্যুতিথি হিসাবে বহুকাল থেকেই পালিত হয়ে আসছে১,৩৫৬ বিঘা জমি নিয়ে গড়ে উঠেছে‘বাবা’র মাজারএই দিনই ভক্তরা শ্রাদ্ধানুষ্ঠানের অয়োজন করেন

মাজারের সামনে। 
প্রতিবছর মেলায় ৪-৫ লক্ষ মানুষের ভিড় হয়মধ্যযুগ থেকে চলে আসা বিশ্বাসের উপর ভর করে আজও ভক্তরা তাঁকে স্মরণ করেবিশ্বাস- তাঁর মাজারের সামনের ‘মক্কা পুকুরে’ শিরনি ভাসিয়ে দিলে বা লালসুতো দিয়ে নিম গাছে, মাজারে ঢিল বেঁধে মানত করলে মনস্কাম পূরণ হয়কঠিন রোগ, চাকরি, সন্তান লাভের আশায় দরগাহ’য় আসেন পীড়িতরাসন্তান লাভের ইচ্ছা পূরণ হলে শিশুকে মক্কা পুকুরে ভাসানোর রীতি আজও চালু রয়েছেমেলা উপলক্ষে রেল দফতর শিয়ালদহ থেকে ঘুটিয়ারি শরিফ পর্যন্ত বিশেষ ট্রেন চালানোর ব্যবস্থা করে থাকেস্থানীয়রা ছাড়াও মুর্শিদাবাদ, বাংলাদেশ, বিহার, ওড়িষ্যা থেকে ভক্তরা বাবার মাজারে আসেন




4 comments:

  1. আপনি গাজী সাহেবের এই ছবি কোথায় পেলেন মানুষের মধ্যে বিভ্রান্তি ছড়ানো ঠিক নয়

    ReplyDelete
  2. Okhana sarki kajar akra. Alla sobai ka eman Dan karuk

    ReplyDelete
  3. কেউ যদি বাবার মাজারে পাশে থাক দয়াকরে অামাকে মিছকল দিও +8801312345796

    ReplyDelete