Saturday 14 January 2017

সুন্দরবনের মানুষের জীবন সংগ্রাম

জঙ্গল-নদী সংলগ্ন বদ্বীপ অঞ্চলের বিক্ষিপ্ত এলাকায় জনবসতি গড়ে উঠেছেমোট জন সংখ্যার ৯৫ শতাংশ কৃষিজীবীযখন কাজ থাকে না সেই সময় বনের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েনমাছ, কাঁকড়া ধরতে কখনও প্রতিবেশীদের সঙ্গে নিয়ে কখনও বা সপরিবারে বনে চলে যাচ্ছেনসামান্য অসতর্ক হলেই বাঘ, কুমিরের কবলে পড়ে প্রাণ হারানএখানকার জমির বেশিরভাগ অংশ লবণাক্তসাধারণ মাত্রা (১.৪-২.৯ এম এম হস/সিএম)আয়লার পর (২৫ মে, ২০০৯) এই মাত্রা বহুগুণ বেড়ে গিয়েছেহয়েছে (৮.৩ এম এম হস/সিএম)গ্রীষ্মে নোনার পরিমাণ আরও বেড়ে যায়কৃষি বা মাছ চাষ করে ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না সুন্দরবনবাসীইতিমধ্যে অনেক পরিবার সুন্দরবন ছেড়ে শহরমুখী হয়েছেন বরাবরের জন্যবহু গরিব যুবক জীবিকার তাগিদে পরিবার নিয়ে ভিন রাজ্যে চলে গিয়েছেনআজও সুন্দরবন ছেড়ে যাচ্ছেন অনেকে
 
এলাকায় কৃষি-শিল্প গড়ে উঠেনিপর্যটন ব্যবসাও সাফল্য পায়নিদারিদ্রতার সুযোগ নিয়ে শিশু, নারী পাচারকারীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেযাঁরা রয়ে যাচ্ছেন বেঁচে থাকতে তাঁরা মাছ-চিংড়ি-কাঁকড়া ধরতে জঙ্গলে চলে যাচ্ছেনবেঘোরে প্রাণ দিচ্ছেন বাঘের মুখে গিয়েএক দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন নদী এলাকায় বসবাসকারী মানুষজনগ্রাম গুলির পুনর্গঠনের  জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার উদ্যোগী হলেও সুন্দরবনবাসীর দুঃখ ঘোচেনিসরকারি হিসাবে ৯২৭ জন মৎস্যজীবী বৈধ সরকারি কাগজপত্র নিয়ে বনে যানকিন্তু গরিবির সংখ্যা দিনদিন বেড়ে চলায় নদী সংলগ্ন এলাকায় বসবাসকারী গ্রামবাসীরা সরকারি নির্দেশকে উপেক্ষা করে  অবৈধ ভাবে বনে চলে যাচ্ছেনবন্যপ্রাণীর হাতে জখম হওয়ার বা প্রাণ হারানো পরও একই ভাবে জঙ্গলে যাচ্ছেনমরাবাঁচার প্রশ্নে তাঁরা কোনও ভাবে পিছু হটছেন না। 


No comments:

Post a Comment