অম্বুবাচী ব্রতঃ ফসলকে কেন্দ্র করে এই ব্রত। মৌসুমীবায়ূকে আহ্বান জানানোর উৎসব।
এ ক’দিন ধরিত্রী রজস্বলা হয়। তাই মাটিতে কোনও কাজ নিষিদ্ধ, মাটির আঁচড় কাটাও বন্ধ। বিধবারা ৭ আষাঢ় থেকে সাড়ে-তিন দিনের ব্রত পালন করে। ব্রতীরা ফল, কাঁচা দুধ খায়।
সান্ধ্যপুজো। |
আগকাটাঃ ফসল কাটা শুরুর আগে কৃষক কোনও শুভদিনে পুব দিকে মুখ করে এক পোঁচে একমুঠো ধান কাটে। কারোর সঙ্গে কথা না বলে বাড়িতে আনে। মহিলারা উলুধ্বনি দিয়ে লক্ষ্মী বরণ করেন। ওই শিস ধান মাটিতে না রেখে গোলায় ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। ধানকাটা পর্ব শেষ হলে ওই ধান বীজ হিসাবে রেখে দেওয়া হয়। কিছু ধান অন্য ধানের সঙ্গে গোলায় ছড়িয়ে দেওয়া হয়।ধানকে সাধ খাওয়ানোঃ তালের আঁটির শাঁস, ঝুনো নারকেলের শাঁস, ফল-মিষ্টির নৈবেদ্য দিয়ে ত্রয়োনারীরা সকালে গর্ভবতী ধানকে স্নান করিয়ে লালচেলি পরিয়ে সেই ধান গাছের সামনে উলুধ্বনি দিয়ে পুজো করে। রীতি পালন করে।
পদচিহ্ন পুজো। |
পৌষ পার্বণঃ আলপনা আঁকা একটি পিঁড়িতে ধান রেখে তার উপর গঙ্গাজল ভর্তি একটি ঘট বসানো হয়। ঘটের উপর সিঁদূর মাখানো রকটি সুপারি রেখে তার চারপাশে ধামা, কুলো, পালি, ঢেঁকি, গোলা, লক্ষ্মীর পায়ের চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়। পিঠে ও খেজুরের গুড় দিয়ে পুরোহিত ডেকে পুজো করা হয়।
পিঠেপুলি উৎসবঃ সংক্রান্তির পরের দিন পিঠেপুলির উৎসব হয়। আমন্ত্রণ করে খাওয়ানো হয়। রীতি আছে- পরিবারের কেউ গঙ্গাসাগরে গেলে পিঠে হয় না। অন্যান্য অনুষ্ঠান বন্ধ থাকে। ফিরে এলে হয়।
সোঁদোপুজোঃ পৌষ সংক্রান্তির দিন গৃহিনীরা ব্যবসা বৃদ্ধির আশায় কলা গাছের খোলায় বাণিজ্যতরী বানিয়ে তাতে মুদির সরঞ্জাম, সব্জি সাজিয়ে নিজেরাই পুজো করে।
ষষ্ঠীব্রতঃ সন্তান কামনায় বিবাহিতরা এই পুজো করেন। প্রতিমাসের কৃষ্ণপক্ষের ষষ্ঠীতে এই ব্রত অনুষ্ঠিত হয়। তেল, হলুদ, দই ও সিদ্ধচাল, দুর্বা, সুপারি দিয়ে অর্ঘ্য সাজিয়ে ষষ্ঠী মূর্তির পুজো করা হয়।
ষেটেরাপুজোঃ সন্তান জন্মানোর পর ষষ্ঠদিনের মাথায় বাড়ির প্রবীণ মহিলাদের উদ্যোগে পুজো করা হয়। গোবর দিয়ে একটি ছোট শিশু বানিয়ে সিঁদূর মাখিয়ে পুজো হয়। লোকমতে, এদিন ব্রহ্মা স্বর্গ থেকে এসে সদ্যজাতের ললাটলিখন (ভাগ্যলিখন) করে যান।
গোকল ব্রতঃ গোরুর-সেবাই এর উদ্দেশ্য। প্রতিদিন স্নানের পর গাভীর শিং-এ তেল, কপালে সিঁদূর, গায়ে কাঁচা হলুদ মাখিয়ে ঘাস/কলাপাতায় একটি পাকা কলা খাওয়াতে হবে। এরপর গাভীর চার-পা ও ক্ষুর ধুয়ে প্রণাম করতে হয়।
এছাড়াও পালিত হয়—
চন্দন ষষ্ঠীঃ বৈশাখে।
বটসাবিত্রী ষষ্ঠীঃ জ্যৈষ্ঠে। দশহরা, শয়নৈকাদশী,
বিপদত্তারিণীঃ আষাঢ়ে। পুজোয় তিন ফল লাগে।
জন্মাষ্ঠমীঃ শ্রাবনে। তালের বড়া লাগে।
তালনবমী, জয়ন্তী দ্বাদশীঃ ভাদ্রে। অপরাজিতা পুজোঃ আশ্বিনে।
ভূত চতুর্দশীঃ কার্তিকে। চোদ্দ রকম শাক খেতে হয়।
ঘটপুজোঃ অগ্রহায়ণে।
বকুল অমাবস্যাঃ পৌষে।
সরস্বতী পুজো-শীতল ষষ্ঠীঃ পুজোর আমের মুকুল লাগে।
দোলযাত্রাঃ ফাল্গুনে।
বারুনীঃ চৈত্রে। গঙ্গায় আম বিসর্জন দেয়।
No comments:
Post a Comment