Thursday 12 January 2017

সুন্দরবন —————— জন্ম কথা

 প্রায় দু’হাজার বছর আগে (মধ্যযুগে) এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর সুন্দরবন সৃষ্ট হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি। এক সময় এই অঞ্চল ছিল সমুদ্র গর্ভে। ভূমিকম্পের পর উত্থান ঘটেছে। অতীতেও সুন্দরবনের জঙ্গলে ও তার আশপাশে জনবসতি ছিল। দুই ২৪ পরগনা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া প্রত্নতত্ত্ব থেকে জৈন ও বৌদ্ধবিহার, বৌদ্ধমুদ্রা, ভগ্নমঠ, স্তূপের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে কুষাণ, পাল, সেন, গুপ্ত, শুঙ্গ, মৌর্য যুগের নিদর্শন। বিজয় সেন, লক্ষণ সেন, পাঠান ও মোগল, বারোভূঁইয়া, ইংরাজরা শাসন করেছে সুন্দরবনে। পরে সম্রাট আকবরের সুবেদার শায়েস্তা খাঁ’র আমলে আরাকান দেশ থেকে এসে পর্তুগীজ (১৬২৮-১৬৩৩) ও মগ (১৭১৮-১৮০০) জলদস্যুরা এই বনবাসীদের উপর অত্যাচার করেছে। সীমাহীন অত্যাচারে এক সময় জনশূন্য হয়ে পড়ে ছিল সুন্দরবন। বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ধ্বং হয় এই জনপদ। পরবর্তী সময়ে ইংরাজরা সুন্দরবনে রাজত্ব শুরু করলে (১৭৫৭) পুনরায় নতুন করে জনবসতি গড়ে ওঠে। প্রথমদিকে সুন্দরবনের কোনও সীমানা ছিল না। পরে ইউরোপীয়রা বন কেটে চাষযোগ্য করে স্থানীয় জমিদারদের মধ্যে ইজারা দিত। ১৬৫৭ সালে শাহসুজা এই বনাঞ্চল থেকে রাজস্ব সংগ্রহের জন্য সরকারের অধীনে আনেন। উইলিয়ম ড্যাম্পিয়র ও লে. হজেস এবং যশোরের তৎকালীণ জজ ও কালেক্টর টিলম্যান হেঙ্কেল উদ্যোগী হয়ে সুন্দরবনের জমি জরিপ করে সীমানা নির্ধারণ করেন (১৮৩০-১৮৮৩)। ১৭৬৪’তে তৈরি হয় মানচিত্র। জমি ইজারা দেওয়ার পর বাকি জঙ্গল রক্ষার কাজের সুবিধার জন্য বন দফতর গঠন করা হয়। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত এলাকা  হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রথম বনকর্তা ছিলেন এম ইউ গ্রীণ
(৯ মে ১৮৮৪ থেকে ১২ মে ১৯৪৬)। মুখ্য কার্যালয় ছিল বাংলাদেশের খুলনায়। 
সুন্দরবনের নামকরণঃ 
সুন্দরবনের নামকরণ নিয়ে গবেষক এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নানা মতভেদ রয়েছে। যেমন—
(১) সমুদ্রের পাশের বন বলেই সমুন্দর-বন বা সুন্দরবন।
(২) সুন্দরী গাছের নাম থেকেই সুন্দরবন।
(৩) ‘সুন্দ্রী’ নাম পরিবর্তিত হয়ে সুন্দরবন হয়ে।
(৪) বাংলাদেশের বাখরগঞ্জের ‘সুগন্ধা’ নদীর নাম থেকেই সুন্দরবন নামের উৎপত্তি।
(৫) ইংরাজ আমলে বিদেশী পর্যটকরা বিভিন্ন ম্যানগ্রোভ গাছপালা দেখে Jungle of ‘Sundry’ Trees  নাম দিয়ে ছিলেন। পরে তা সুন্দরবন নাম হয়।
(৬) বরিশালের ‘সুন্ধা’ নদীর পাড়ের বন থেকে ‘সুন্ধর-বন’ নামের সৃষ্টি বলে অনেকের দাবি।
(৭) এদেশে ইংরাজদের আসার বহু আগে ফরাসি উপনিবেশ স্থাপনের সময় এই অঞ্চলের নাম ছিল ‘স্যান্ডারবন’তা থেকে সুন্দরবন হয়েছে। ইংরাজ আমলে ‘সুদরীবনস’ থেকে সুন্দরবন নাম হয়।{গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদের মোহনায় বঙ্গোপ সাগরের গা ঘেঁষে দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে নদী, খাল, খাঁড়ি এবং শাখা নদী বিধৌত ও বিভক্ত অংশই সুন্দরবন। ম্যানগ্রোভ অরণ্যভূমি বা বাদাবন}। 


সুন্দরবন ——————  জন্ম কথাঃ
প্রায় দু’হাজার বছর আগে (মধ্যযুগে) এক প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পর সুন্দরবন সৃষ্ট হয়েছে বলে বিশেষজ্ঞদের দাবি। এক সময় এই অঞ্চল ছিল সমুদ্র গর্ভে। ভূমিকম্পের পর উত্থান ঘটেছে। অতীতেও সুন্দরবনের জঙ্গলে ও তার আশপাশে জনবসতি ছিল। দুই ২৪ পরগনা এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় পাওয়া প্রত্নতত্ত্ব থেকে জৈন ও বৌদ্ধবিহার, বৌদ্ধমুদ্রা, ভগ্নমঠ, স্তূপের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। মিলেছে কুষাণ, পাল, সেন, গুপ্ত, শুঙ্গ, মৌর্য যুগের নিদর্শন। বিজয় সেন, লক্ষণ সেন, পাঠান ও মোগল, বারোভূঁইয়া, ইংরাজরা শাসন করেছে সুন্দরবনে। পরে সম্রাট আকবরের সুবেদার শায়েস্তা খাঁ’র আমলে আরাকান দেশ থেকে এসে পর্তুগীজ (১৬২৮-১৬৩৩) ও মগ (১৭১৮-১৮০০) জলদস্যুরা এই বনবাসীদের উপর অত্যাচার করেছে। সীমাহীন অত্যাচারে এক সময় জনশূন্য হয়ে পড়ে ছিল সুন্দরবন। বারবার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ধ্বং হয় এই জনপদ। পরবর্তী সময়ে ইংরাজরা সুন্দরবনে রাজত্ব শুরু করলে (১৭৫৭) পুনরায় নতুন করে জনবসতি গড়ে ওঠে। প্রথমদিকে সুন্দরবনের কোনও সীমানা ছিল না। পরে ইউরোপীয়রা বন কেটে চাষযোগ্য করে স্থানীয় জমিদারদের মধ্যে ইজারা দিত। ১৬৫৭ সালে শাহসুজা এই বনাঞ্চল থেকে রাজস্ব সংগ্রহের জন্য সরকারের অধীনে আনেন। উইলিয়ম ড্যাম্পিয়র ও লে. হজেস এবং যশোরের তৎকালীণ জজ ও কালেক্টর টিলম্যান হেঙ্কেল উদ্যোগী হয়ে সুন্দরবনের জমি জরিপ করে সীমানা নির্ধারণ করেন (১৮৩০-১৮৮৩)। ১৭৬৪’তে তৈরি হয় মানচিত্র। জমি ইজারা দেওয়ার পর বাকি জঙ্গল রক্ষার কাজের সুবিধার জন্য বন দফতর গঠন করা হয়। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত এলাকা  হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছিল। প্রথম বনকর্তা ছিলেন এম ইউ গ্রীণ
(৯ মে ১৮৮৪ থেকে ১২ মে ১৯৪৬)। মুখ্য কার্যালয় ছিল বাংলাদেশের খুলনায়। 
সুন্দরবনের নামকরণঃ 
সুন্দরবনের নামকরণ নিয়ে গবেষক এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে নানা মতভেদ রয়েছে। যেমন—
(১) সমুদ্রের পাশের বন বলেই সমুন্দর-বন বা সুন্দরবন।
(২) সুন্দরী গাছের নাম থেকেই সুন্দরবন।
(৩) ‘সুন্দ্রী’ নাম পরিবর্তিত হয়ে সুন্দরবন হয়ে।
(৪) বাংলাদেশের বাখরগঞ্জের ‘সুগন্ধা’ নদীর নাম থেকেই সুন্দরবন নামের উৎপত্তি।
(৫) ইংরাজ আমলে বিদেশী পর্যটকরা বিভিন্ন ম্যানগ্রোভ গাছপালা দেখে Jungle of ‘Sundry’ Trees  নাম দিয়ে ছিলেন। পরে তা সুন্দরবন নাম হয়।
(৬) বরিশালের ‘সুন্ধা’ নদীর পাড়ের বন থেকে ‘সুন্ধর-বন’ নামের সৃষ্টি বলে অনেকের দাবি।
(৭) এদেশে ইংরাজদের আসার বহু আগে ফরাসি উপনিবেশ স্থাপনের সময় এই অঞ্চলের নাম ছিল ‘স্যান্ডারবন’তা থেকে সুন্দরবন হয়েছে। ইংরাজ আমলে ‘সুদরীবনস’ থেকে সুন্দরবন নাম হয়।{গঙ্গা, ব্রহ্মপুত্র ও মেঘনা নদের মোহনায় বঙ্গোপ সাগরের গা ঘেঁষে দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে নদী, খাল, খাঁড়ি এবং শাখা নদী বিধৌত ও বিভক্ত অংশই সুন্দরবন। ম্যানগ্রোভ অরণ্যভূমি বা বাদাবন}। 

No comments:

Post a Comment